Location

2066, EverCare Hospital Link Road ( Near Royel School & Waterpolo Swiming Pool), Bashundhara, Dhaka-1229, Bangladesh

Service Hours

Sat - Thu
11:00 AM - 08:00 PM

Language:

ইরেকটাইল ডিসফাংশন এবং প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন: বর্তমান বাস্তবতা ও প্রতিকার

In This Article

erectile disfunction

বর্তমান সময়ে পুরুষের শারীরিক অক্ষমতা বা বিভিন্ন সেক্সুয়াল ডিসফাংশন অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শারীরিক ও অন্যান্য সমস্যার কারণে সারাবিশ্বে প্রায় ১৬০ মিলিয়ন পুরুষ ইরেকটাইল ডিসফাংশন ও প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন এর সমস্যায় ভুগছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যাটি প্রায় ৩২২ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।

বিভিন্ন গবেষণার তথ্যমতে, ৩১ শতাংশ পুরুষ কোনো না কোনো মাত্রার ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সমস্যায় ভুগছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, বেশিরভাগ পুরুষই তাদের শারীরিক সমস্যা উপেক্ষা করেন কিংবা লজ্জার কারণে কারও সাথে শেয়ার করেন না।

আবার কেউ কেউ অবৈজ্ঞানিক ভেষজ পদ্ধতি, বিপদজনক ঔষধ বা ওয়ান টাইম ইনজেকশন বা অনলাইন থেকে কোনো ডিভাইস কিনে ব্যবহার করছেন। মেডিক্যাল বিজ্ঞানে এ বিষয়গুলি ভিত্তিহীন।

একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের অবৈজ্ঞানিক ভেষজ পদ্ধতি বা অস্থায়ী চিকিৎসা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্ষতিকর। যা পরবর্তীতে মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে।

ইরেকটাইল ডিসফাংশন কি? শারীরিক মিলনের পূর্বশর্ত হলো পুরুষাঙ্গের যথাযথ উত্থান, অর্থাৎ সন্তোষজনকভাবে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য পুরুষাঙ্গের উত্থান একটি স্বাভাবিক আচরণ।

একজন পুরুষ যখন যৌন সম্পর্ক করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তখন যদি পুরুষাঙ্গ সঙ্গমের জন্য উপযুক্তভাবে উত্থান না হয়, তখন এটাকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা বলে।

আরও সহজভাবে বলতে গেলে, একজন পুরুষ ইন্টারকোর্স বা যৌন সম্পর্ক করার সময় যদি পুরুষাঙ্গ যথেষ্ট পরিমাণে শক্ত না হয় বা একেবারেই শক্ত না হয়, কিংবা শক্ত হলেও কিছুক্ষণ পরে আবার নরম হয়ে যায়, এই তিনটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যে কোনো একটি যদি কমপক্ষে ৩-৬ মাস ধরে প্রায় প্রতিবার সহবাস করার ক্ষেত্রে ঘটে, তখন তাকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা আখ্যায়িত করা হয়।

এছাড়াও যদি নিয়মিত আপনার পার্টনার বা সঙ্গীর ইচ্ছার চেয়ে দ্রুত সময়ে বীর্যপাত ঘটে, অর্থাৎ যৌন সঙ্গম শুরু করার আগেই কিংবা যৌন সঙ্গম শুরু করার এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে আপনার বীর্যপাত ঘটে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার যে সমস্যা টি হচ্ছে তা হলো প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন।

কিভাবে পুরুষের যৌন উওেজনা ঘটে?

পুরুষের যৌন উত্তেজনা একটি জটিল প্রক্রিয়া যার সাথে মস্তিষ্ক, হরমোন, আবেগ, স্নায়ু বা নার্ভ, মাংসপেশী ও রক্তনালী জড়িত।

অর্থাৎ একজন পুরুষ মানুষ হিসাবে আপনি যখন যৌন উদ্দীপক কোন কিছু মনে মনে কল্পনা বা চিন্তা করেন, কোন কিছু দেখেন বা শুনেন কিংবা আপনার যৌন সঙ্গীকে স্পর্শ করেন তখন আপনার ব্রেইন স্টিমুলেটেড হয়।

এর ফলে হরমোন এবং কিছু নার্ভের সম্মিলিত ক্রিয়ার মাধ্যমে রক্তনালী গুলো প্রসারিত হয় এবং পুরুষাঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়।

যার ফলে পুরুষাঙ্গ বেলুনের মতো ফুলে গিয়ে ইরেক্ট বা উত্তান হয়। এর যে কোনো একটিতে সমস্যা দেখা দিলেই ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্তানজনিত সমস্যা হতে পারে।

ইরেকটাইল ডিসফাংশন কেন হয়?

ইরেকটাইল ডিসফাংশন সাধারণত মানসিক এবং শারীরিক যে কোনো কারণেই হতে পারে। তবে আজকাল অনেক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে- প্রায় ৪৮ শতাংশ লিঙ্গ উত্তানজনিত সমস্যার মূল কারণ ভাসকুলার বা রক্তনালীতে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহ না পাওয়া বা নার্ভ সাপ্লাই কম হওয়া।

এছাড়াও শারীরিক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডায়াবেটিক, পুরুষ হরমোন টেসটোস্টেরন লেভেল কমে যাওয়া এবং প্রোলেকটিন বেড়ে যাওয়া।

অপুষ্টি, অতিরিক্ত চর্বির আধিক্য বা হাইপারলিপিডিমিয়া, সিডেন্টারি লাইফস্টাইল বা অলস জীবনযাপন, ইনসমনিয়া বা দীর্ঘদিনের ঘুমের সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদী কোমর ব্যথার কারণে নার্ভে চাপ লেগে থাকা এবং অনেক দিন যাবত ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিক, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড ও মানসিক রোগের ঔষধ সেবনের ফলেও ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা উত্তানজনিত সমস্যা হতে পারে।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ বছরের পরে ৪০ শতাংশ, ৫০ বছরের পরে ৫০ শতাংশ এবং ৬০ বছরের পরে ৬০ শতাংশ পুরুষের ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা উত্তানজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন।

এর কারণ মূলত দুটি- প্রথমত পুরুষ হরমোন টেসটোস্টেরন কমে যাওয়া এবং দ্বিতীয়ত পুরুষাঙ্গের রক্তনালীর ভিতরে চর্বি জমে গিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্তের ফ্লো বা সার্কুলেশন হতে না পারা, যার ফলে ভাসকুলার ইরেকটাইল ডিসফাংশন সমস্যা দেখা দেয়।

অনিয়মিত যৌন সম্পর্কের ফলে ইরেকটাইল

ডিসফাংশন

আজকাল প্রায়শই আমরা আমাদের চেম্বারে কিছু রোগী পাচ্ছি যারা হয়তো তিন থেকে চার বছর বা তারও বেশি দিন যাবত কাজের প্রয়োজনে পরিবার ছাড়া প্রবাসে থাকেন।

বিদেশে যাওয়ার আগে তাদের কোনো ধরনের উত্তানজনিত সমস্যা ছিলো না। কিন্তু প্রবাসে থাকার এই দীর্ঘ সময়টাতে তারা ধর্মীয় পাপবোধ বা নৈতিক দিক কিংবা আর্থিক দিক চিন্তা করে কারো সাথে কোনো যৌন সম্পর্কে মিলিত হননি।

দীর্ঘদিন পরে দেশে এসে এখন তার পার্টনারের সাথে নিয়মিতই লিঙ্গ উত্তানজনিত সমস্যা ফেইস করছেন। যেটা মূলত অনিয়মিত যৌন সম্পর্ক বা লং সেক্সুয়াল গ্যাপ কিংবা এসেক্সুয়ালিটির কারণে পুরুষাঙ্গের টিস্যু গুলোতে রক্তপ্রবাহ বা সার্কুলেশন কমে গিয়ে ইরেকশনের সাথে সম্পর্কিত মাংসপেশী গুলো দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হয়।

ইরেকটাইল ডিসফাংশনের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • একটি ইরেকশন বা উথ্হান রাখা সমস্যা
  • একটি ইরেকশন পেতে সমস্যা
  • কম যৌন ইচ্ছা

কিভাবে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ED) নির্ণয় করা

হয়?

যেহেতু ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের বিভিন্ন কারণ রয়েছে, তাই আপনার ডাক্তার এই অবস্থা নির্ণয় করতে এবং এর কারণ নির্ধারণ করতে বিভিন্ন পরীক্ষা ব্যবহার করতে পারেন।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের কারণ নির্ণয় করার পরেই এটি কার্যকরভাবে চিকিত্সা করা যেতে পারে।

আপনার শারীরিক পরীক্ষা এবং সাক্ষাত্কারের পরে, আপনার অবস্থা আরও ভালভাবে নির্ণয় করার জন্য আপনার ডাক্তার নিম্নলিখিত পরীক্ষার যেকোনও আদেশ দিতে পারেন:

  • সম্পূর্ণ রক্ত গণনা (CBC)
  • লিভার এবং কিডনি ফাংশন পরীক্ষা
  • লিপিড (চর্বি) প্রোফাইল পরীক্ষা
  • থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা
  • রক্তের হরমোন গবেষণা
  • Urinalysis
  • ডুপ্লেক্স আল্ট্রাসাউন্ড
  • বুলবোক্যাভারনোসাস রিফ্লেক্স
  • নিশাচর পেনাইল টিউমসেন্স (NPT)
  • পেনাইল বায়োথেসিওমেট্রি
  • ভাসোঅ্যাকটিভ ইনজেকশন
  • ডাইনামিক ইনফিউশন ক্যাভারনোসোমেট্রি
  • ক্যাভারনোসোগ্রাফি
  • আর্টেরিওগ্রাফি

আপনার বয়স যদি ৩৫-৪০ এর উপরে হয় এবং আপনি যদি নিয়মিত ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্তানজনিত সমস্যা বা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে কোনো প্রকার চিকিৎসা নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে আপনার রক্তে টেসটোস্টেরন ও প্রোলেকটিন হরমোন ঠিক আছে কি না তা দেখা নেওয়া উচিত।

এছাড়াও ডুপ্লেক্স স্টাডি অফ পেনাইল ভেসেলস কিংবা পেনিসের কালার ডপলার স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তপ্রবাহ বা নার্ভ সাপ্লাই ঠিক আছে কি না তা দেখে, যদি ভাসকুলার বা রক্তপ্রবাহজনিত কারণে ইরেকটাইল ডিসফাংশন থাকে, তাহলে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।

ইরেকটাইল ডিসফাংশন কি ভালো হয়?

আমাদের দেশে একটি প্রচলিত মিথ বা ভুল ধারণা যে যৌন অক্ষমতার কোনো সমাধান নেই। তবে সঠিক কথা হচ্ছে, সম্পূর্ণ কাটাছেঁড়া ছাড়া ব্যথামুক্ত শকওয়েভ ও মিনিমাল ইনভেসিভ পি-শট বা পিআরপি চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব।

ইরেকটাইল ডিসফাংশনের জন্য ফোকাসড-

শকওয়েভ থেরাপি কিভাবে কাজ করে?

শকওয়েভ চিকিৎসা যা একটি বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গের বাইরে থেকে অভিঘাত তরঙ্গ বা জলতরঙ্গ দেয়া হয়। যা যান্ত্রিক কিন্তু বৈদ্যুতিক নয়।

চিকিৎসার এই পদ্ধতিতে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধির ফলে শরীরের নিজস্ব পুনর্গঠন পদ্ধতিকে (ন্যাচারাল গ্রোথ ফ্যাক্টর) কাজে লাগিয়ে নতুন টিস্যু তৈরি করতে সাহায্য করে, যার ফলে পুনরায় লিঙ্গ উত্তান হয়।

এই পদ্ধতিতে আমরা যেকোনো একজন রোগীকে তার পেনিসের বেজ, শ্যাফট এবং পেরোনিয়াল এরিয়াতে শকওয়েভ বা জলতরঙ্গ দেয়া হয়। যার ফলে ওখানে সাইটোকাইনোসিস বলে একটা কেমিক্যাল রিলিজ হয় তখন বডি পার্ট থেকে ব্রেইন পর্যন্ত একটি ইমপালস্ যায়।

ব্রেইন তখন আপনার শরীরে যে কিছু এনজিওজেনিক বা ন্যাচারাল গ্রোথ ফ্যাক্টর থাকে যেমন- এপিথেলিয়াল নাইট্রিক অক্সাইড সিনথেস, ভেসেল এন্ডোথেলিয়াল গ্রোথ ফ্যাক্টর, সেল প্রোলিফারেটিং ফ্যাক্টর এবং স্টেম সেলকে স্টিমুলেট করে নতুন করে টিস্যু রিজেনারেট করে।

ইরেকটাইল ডিসফাংশনের জন্য পি-শট বা প্লাজমা

থেরাপি কিভাবে কাজ করে?

পি-শট বা প্লাজমা থেরাপিকে বলা হয় মিনিমাল ইনভেসিভ চিকিৎসা পদ্ধতি। যা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ১৯৮০ সাল থেকে প্লেটলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি চিকিৎসাটি শুরু হয়েছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক নাম গ্রীক দেবতাদের থেকে এসেছে। ঠিক এক গ্রীক দেবতার নাম অনুসারে প্রিয়াপাস শট বা পি-শট এর নামকরণ করা হয়েছে। যাকে “গড অফ রিজেনারেটিভ পাওয়ার” বলা হয়।

পি-শট বা প্রিয়াপাস শট চিকিৎসাটি মূলত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে একজন দক্ষ ফ্ল্যাবটমিস্ট রোগীর হাত থেকে বিশেষ ধরনের এসিডি জেল টিউব বা পিআরপি টিউবের মাধ্যমে ২০ মিঃলিঃ বা পরিমাণ মত রক্ত নিয়ে সেন্টিফিউজ মেশিনে প্রসেস করতে দেন।

ঠিক এই সময়ে রোগীর চিকিৎসার জায়গাতে এনাস্থেটিক ক্রিম দিয়ে কিছু র‍্যাপিং করে রেখে দেন। পরবর্তীতে এনাস্থেটিক ক্রিম পরিষ্কার করে লোকাল এনাস্থেটিক ইনজেকটেবল দেওয়া হয়।

সর্বশেষ রোগীর শরীরের প্লাজমা কে আলাদা করে ইনসুলিনের মাইক্রো নিডল দিয়ে পুরুষাঙ্গের বিভিন্ন পয়েন্টে ইনজেকশন করে দেওয়া হয়। এই পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়ার জন্য সময় লাগে ৩০-৪০ মিনিট।

এই চিকিৎসা ২১ দিন থেকে ৩০ দিন পর পর মোট ৩-৪ বার নিতে হয়। এটাকে রিজেনারেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতি বলা হয়, যার ফলে পুরুষাঙ্গের টিস্যু গুলো রিপেয়ার বা রিজুভেনেট হয়।

পি-শট ও ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপির

উপকারিতা কি?

ভাসকুলার বা রক্তচলাচল জনিত কারণে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হলে পুরুষাঙ্গের রক্তনালী গুলো অনেক বেশি সংকুচিত হয়ে রক্তপ্রবাহ কমে যায়।

সেইক্ষেত্রে পি-শট ও ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপির মাধ্যমে পুরুষাঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায়, যার ফলে পুনরায় লিঙ্গ উত্তান হয় এবং দ্রুতবীর্যপাতের সমস্যাও ঠিক হয়ে যায়।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, শকওয়েভ এবং পি-শট চিকিৎসা পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময়ের জন্য একজন পুরুষ তার যৌন সক্ষমতা ফিরে পান এবং উপকৃত হন। যেসব পুরুষের এ সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এক নতুন আশার সঞ্চার করেছেন গবেষকরা।

অর্থাৎ যেসব পুরুষ সহবাসের সময় অতি গুরুতর লিঙ্গ উত্তানজনিত সমস্যায় ভুগছেন, শকওয়েভ এবং পি-শট চিকিৎসা নিয়ে তারা এ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, যাদের হার্টে রিং পড়ানো এবং কিডনি সমস্যায় রোগীরাও এই চিকিৎসা নিতে পারেন।

সাধারণত বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে ভালো ফলাফল বা উপকার আমরা আশা করি। তবে কখনও কখনও কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা শেষ করার পরেও ভালো ফল পেতে ৩ থেকে ৪ মাস অপেক্ষা করতে হয়।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ইরেকটাইল ডিসফাংশনের

চিকিৎসা

পুরুষ ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। রসুন বাড়িতে পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ সবজিগুলির মধ্যে একটি যা ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসায় সহায়ক।

যারা স্নায়বিক ক্লান্তি থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য অতিমাত্রায় যৌন মিথস্ক্রিয়ায় লিপ্ত হন তাদের জন্য রসুন গুরুত্বপূর্ণ। পেঁয়াজ একটি কার্যকর কামোদ্দীপক এবং সেরা লিবিডো বৃদ্ধিকারী হিসাবে বিবেচিত হয়, তবে এর বৈশিষ্ট্যগুলি সাধারণত জানা যায় না।

১৫০ গ্রাম গাজর নিন, সূক্ষ্মভাবে কাটা। আধা সেদ্ধ ডিম এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন এক বা দুই মাস খান। এছাড়াও ঢেঁড়সের রুট পাউডার এক গ্লাস দুধ এবং দুই চা চামচ মিছরি (মিছরি চিনি) প্রতিদিন খেলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন ভালো হতে পারে।

তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমাধান হল ব্যায়াম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মক্ষম থাকুন। কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামের ফলে হার্টের ক্ষমতা বাড়বে।

সেক্সুয়াল পারফরম্যান্স বাড়াতে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার— যে ভাবেই হোক না কেন, হার্টের ক্ষমতা বাড়লে বেডরুমেও আপনি মাস্টার স্ট্রোক দিতে পারবেন।

আমেরিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রোগের মুক্তি মিলতে পারে কেগাল এক্সারসাইজের মাধ্যমে। এই ব্যায়ামে ৪০% ক্ষেত্রে ইরেকটাইল ডিসফাংশন সারিয়ে ফেলা সম্ভব।

কেগাল ব্যায়াম হলো পেলভিকের নীচের দিকে, পেলভিক ফ্লোর মাসলের ব্যায়াম যা পেশিকে সুগঠিত করা যায়। দিনে অন্তত ৩ বার কিছুক্ষণ এই ধরনের ম্যাসাজের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর যৌনজীবন লাভ করা যায়।

এই ব্যায়াম পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন অনেক বাড়িয়ে দেয় এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের সম্ভাবনা কমায়। ব্যায়াম করুন নিয়মিত, স্ট্রেস কমান এবং নেশাকে বলুন গুডবাই, তাহলেই আপনার যৌনজীবন হবে স্বাস্থ্যকর।

কিছু ড্রাগ যৌন আকাঙ্ক্ষা কমিয়ে দিতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে এই ধরনের কিছু ওষুধ:

  • এন্টিডিপ্রেসেন্ট
  • রক্তচাপের ওষুধ
  • জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল (কিছু গবেষণায় একটি যোগসূত্র দেখানো হয়েছে; অন্যরা তা করে না)
  • কেমোথেরাপি
  • এইচআইভি বিরোধী ওষুধ
  • ফিনাস্টেরাইড

ওষুধ বা ডোজ পরিবর্তন করলে উপকার হতে পারে — আপনার ডাক্তারকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করুন এবং কখনই নিজে কোন ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না। আপনার ডাক্তারকেও বলুন আপনার সমস্যার কথা।

মানসিক কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম পারফরমেন্স এনজাইটি। যে কারণেই হোক না কেন, ডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয় করতে হবে সবার আগে।

একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পুরুষাঙ্গের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, কালার ডপলার স্ক্যানিং বা ডুপ্লেক্স স্টাডি পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তপ্রবাহ ঠিক আছে কিনা তা দেখে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেন।

সঠিক সময়ে যদি ইরেকটাইল ডিসফাংশনজনিত সমস্যার সঠিক চিকিৎসা না করেন তাহলে দীর্ঘস্থায়ী পুরুষত্বহীনতা বা পারমানেন্ট ইমপোটেন্সি হতে পারে। এছাড়াও দাম্পত্য কলহসহ বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে।

বেশ কয়েকটি ওষুধের প্রতিক্রিয়া এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির কারণে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে। এছাড়াও ইরেকটাইল ডিসফাংশন বিভিন্ন মানসিক কারণে হতে পারে:

  • বিষণ্নতার কারণে মানুষের যৌনইচ্ছা হ্রাস পায় বিশেষত, যৌন শিথিলতার কারণে অঙ্গবদ্ধতা সমস্যা হতে পারে।
  • একটি বড় পরিমাণে মানসিক চাপ, ভয়, উত্তেজনা বা উদ্বেগের কারণেও ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে।
  • অনেক পুরুষ পেশাগত উদ্বেগ এবং যৌন ব্যর্থতার অনুভূতিতে ভোগেন। এই কারণেও ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর অসুবিধা হতে পারে।
  • সঙ্গী বা স্ত্রীর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ খারাপ দুর্ব্যবহারের কারণে বা মিলনের জন্য চাপের ফলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে।

পরিশেষে বলা যায় যে, ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসা বাংলাদেশেই সম্ভব। তাই যারা এ সমস্যায় ভুগছেন তাদের উচিত দ্রুত ডাক্তারের শরাণাপন্ন হওয়া। যাদের ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে প্রচণ্ড মাত্রায় হতাশা কাজ করে। কখনো কখনো নিজের ওপর বিশ্বাস এবং নিজের ওপর শ্রদ্ধা সম্পূর্ণরূপে চলে যায়। তাই ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর অসুস্থতা নিরাময়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

Talk With Us!