Location

2066, EverCare Hospital Link Road ( Near Royel School & Waterpolo Swiming Pool), Bashundhara, Dhaka-1229, Bangladesh

Service Hours

Sat - Thu
11:00 AM - 08:00 PM

Language:

পেরোনিজ ডিজিজ বা পুরুষাঙ্গ বাঁকা সমস্যার আধুনিক চিকিৎসা ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি এবং পিশট বা প্লাজমা থেরাপি

In This Article

Curved Penis

পুরুষাঙ্গ বা লিঙ্গ বাঁকা হয়ে যাওয়া হলো একটি কানেকটিভ টিস্যু ডিসঅর্ডার। এ ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের নরম টিস্যুতে ফাইব্রাস প্ল্যাকের বৃদ্ধি ঘটে। প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে এক থেকে চারজনের এ সমস্যা হয় বা হতে পারে। 

বিশেষ করে লিঙ্গের টিউনিকা অ্যালবুজিনা অংশে ফাইব্রোসিং প্রক্রিয়া ঘটে। টিউনিকা অ্যালবুজিনো হলো একটি ফাইব্রাস টিস্যু, যা লিঙ্গের কর্পোরা কেভারনোসাকে ঢেকে রাখে।

লিঙ্গের এ ধরনের সমস্যাকে মেডিকেল পরিভাষায় পেরোনিজ ডিজিজ বলা হয়। কখনো কখনো একে ফাইব্রাস কেভারনোসাইটিসও বলা হয়। এ পরিস্থিতিকে ইরেকটাইল টিস্যুর (কেভারনোসা) স্তরগুলোকে ফাইব্রাস স্কার টিস্যু তৈরি হয়।

কী কারণে পেরোনি’জ ডিজিজ ঘটে?

যদিও পেরোনি’জ ডিজিজের সঠিক কারণ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে এটা জানা যায়, লিঙ্গের কিছু অংশের স্বাভাবিক ইলাস্টিক টিস্যুর জায়গায় স্কার টিস্যু বা অস্থিস্থাপক টিস্যু তৈরি হলে এ অবস্থাটি ঘটে।

স্বাভাবিক পুরুষের ক্ষেত্রে উত্থানের সময় লিঙ্গের ইলাস্টিক টিস্যু বিস্তৃত হয়ে লিঙ্গকে সাজাসুজি উত্থান করে তোলে।

যেহেতু স্কার টিস্যু ইলাস্টিক বা স্থিতিস্থাপক নয় বরং শক্ত চুনার মত সেহেতু লিঙ্গের অন্যান্য অংশ বড় হওয়ার সময় এটা (স্কার টিস্যু) কঠিন বা শক্ত থেকে যায়, ফল হিসেবেও লিঙ্গ বেঁকে যায়।

যদি স্কার টিস্যু লিঙ্গের চারপাশে বিস্তৃত হয় তা হলে লিঙ্গটা একটা বোতলের গলার মতো দেখায় অথবা লিঙ্গ অনেক ছোট হয়ে যেতে পারে।

এ কথা বিশ্বাস করা হয়, কিছু অনাকাঙিক্ষত কারণে লিঙ্গ বাঁকা হতে পারে। এসব কারণে মধ্যে রয়েছে আঘাত, ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কিংবা উত্থিত লিঙ্গে চাপ প্রয়োগ।

পেরোনি’জ ডিজিজের অন্য কারণের মধ্যে রয়েছে নিজে নিজে যদি কেউ ইনজেকশনের মাধ্যমে লিঙ্গ উথ্হানের চিকিৎসা করে। 

কিছু রোগের কারণেও পেরোনি’জ ডিজিজ হয়। এসব রোগের মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, ধমনী শক্ত হওয়া কিংবা ডায়াবেটিস এবং ডিকোয়ারবেনস টেনোসায়নোভাইটিস।

লিঙ্গে আগাত পেলে তা ঠিকমতো সেরে না উঠলেও পেরোনি’জ ডিজিজ হতে পারে। 

পেরোনি’জ ডিজিজ এর লক্ষণ

লিঙ্গ শক্ত হলে ব্যথা হতে পারে, দড়ির মতো কিছু অনুভূত হতে পারে অথবা লিঙ্গ অস্বাভাবিক বেঁকে যেতে পারে। লিঙ্গ চিকন অথবা ছোট হয়ে যেতে পারে।

রোগের প্রাথমিক স্তরে ব্যথা হতে পারে, যা সচরাচর ১২ থেকে ১৮ মাসে চলে যায়। শেষ দিকে লিঙ্গের উত্থান ব্যাহত হয়, অর্থাৎ পুরুষত্বহীনতা ঘটে।

লিঙ্গের এ অবস্থায় যৌনমিলন যন্ত্রণাদায়ক বা কষ্টকর হতে পারে, যদিও অনেক পুরুষ রোগ থাকা সত্ত্বেও সন্তোষজনক যৌনমিলনের কথা বলে থাকেন।

যেকোনো জাতি ও বয়সের পুরুষদের এ সমস্যা হতে পারে, তবে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ৪০ বছরের অধিক ককেশিয়ান পুরুষদের মধ্যে।

এ রোগ সংক্রামক নয় কিংবা কোনো ধরনের ক্যান্সারের সাথেও সম্পৃক্ত নয়। এ রোগ শুধু পুরুষের লিঙ্গে হয়।

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা : 

একজন দক্ষ সার্জন বা ইউরোলজিস্ট বা রিজেনারেটিভ থেরাপি প্র্যাকটিশনার এ রোগ নির্ণয় করতে পারেন এবং চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারেন। 

পেরোনি’জ ডিজিজের চিকিৎসায় সার্জারি:

যেহেতু পেরোনি’জ ডিজিজ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক  রকম হয়, তাই এর চিকিৎসাও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।  কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই এ রোগ এক দু’বছরের মধ্যে ভালো হয়।

এমনকি স্কার টিস্যু চলে যেতে পারে। আবার দুঃখজনক ব্যাপার হলো শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ পুরুষের এ সময়ে কোনো পরিবর্তন দেখা দেয় না এবং অন্য ৪০ ভাগ পুরুষের অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে।

বর্তমানে দু’ধরনের সার্জারি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একটি হলো নেসবিট পদ্ধতি। পেরোনি’জ ডিজিজে এ অপারেশনটি সবচেয়ে বেশি করা হয়।

তবে এ ক্ষেত্রে লিঙ্গ সচরাচর এক থেকে দু’ইঞ্চি ছোট হয়ে যায়। অন্য আরেকটি পদ্ধতিতে স্কার টিস্যুর জায়গা গ্রাফটেড টিস্যু লাগানো হয়, তবে অনেক ক্ষেত্রে আংশিক বা সম্পূর্ণ পুরুষত্বহীনতা ঘটতে পারে।

অপারেশন বিহীন আধুনিক চিকিৎসা এক্সট্রাকর্পোরাল ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি (ESWT) এবং পিশট বা প্লাজমা থেরাপি

এক্সট্রাকর্পোরাল শক ওয়েভ চিকিৎসা যা একটি বিশেষ যন্তের মাধ্যমে পেনিস/পুরুষাঙ্গের বাহির হতে চামড়ার ভিতর দিয়ে অভিঘাত তরঙ্গ বা একুইস্টিক প্রেসার ওয়েভ প্রবেশ করিয়ে আক্রান্ত স্হানের উপর প্রয়োগ করা হয়।

এই অভিঘাত তরঙ্গ যান্ত্রিক কিন্তু বৈদ্যুতিক নয়। এই শ্রাবণযোগ্য কম মাত্রার শব্দ তরঙ্গ পেনিসের টিস্যুর ভিতরে প্রবেশ করে আক্রান্ত স্হানে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে।

চিকিৎসার এই পদ্দতিতে রক্তপ্রবাহ বৃদ্বির ফলে আক্রান্ত স্হানটি শরীরের নিজস্ব পুর্নগঠন পদ্বতিকে কাজে লাগিয়ে স্বাভাবিক প্রদাহ জনিত যে প্রক্রিয়া তাকে উদ্দীপ্ত করার মাধমে নতুন টিস্যু তৈরি করতে সাহায্য করে, যার ফলে স্কার টিস্যুর কাঠিন্যকে ঠিক করে দেয় এবং লিঙ্গকে সোজা করে। 

পি-শট বা প্রিয়াপাস শট (Priapus Shot) হলো পিআরপি বা প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা

যেখানে রোগীর হাত থেকে বিশেষ ধরনের এসিডি জেল টিউবের মাধ্যমে ১০-১২ মিলি ব্লাড নিয়ে সেটাকে সেন্টিফিউজ করে হাইলি কনসেনট্রেট বা গ্রোথ-ফেক্টর যুক্ত যে প্লাজমা থাকে সেটাকে ইনসুলিনের মাইক্রো নিডেল দিয়ে আক্রান্ত টিস্যুতে ইনজেক্ট করে পরবর্তিতে আবার ফোকাসড শকওয়েভ দিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।  

পেরোনিজ ডিজিজ বা পুরুষাঙ্গের বাঁকা সমস্যার ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি ও পিশট বা প্লাজমা থেরাপি নতুন চিকিৎসা, যা পুরোপুরি নিরাপদ ও দ্রুত কার্যকর।

ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি মার্কিন যুক্তরাষ্টের ঔষধ নিয়ন্তন সংস্থা (US) FDA কর্তৃক অনুমোদিত। এই পদ্বতিটি কোন প্রকার রক্তপাত, কাটাছেঁড়ার ঝামেলাবিহীন ও পাশ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত।

এই সম্পূর্ন চিকিৎসার প্রসেসের জন্য সময় লাগে ৪০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা। ২১ দিন পর পর ৪-৫ বার বা শেসন এই চিকিৎসা নিতে হয় টোটাল।

ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি এবং পিশট বা প্লাজমা চিকিৎসার মাধ্যমে পেরোনিজ ডিজিজ বা পুরুষাঙ্গ বাঁকা ঠিক হওয়ার পাশাপাশি  পুরুষাঙ্গের আকার ও পুরুত্ব বৃদ্ধি করতে কাজ করে থাকে। 

পি-শট এবং শকওয়েভ থেরাপি কেন এতো বেশি জনপ্রিয়? কারণ এটি-

🔹 অ-সংক্রামক 

🔹 সাশ্রয়ী

🔹 লিঙ্গ-উত্থান স্বাভাবিক করে 

🔹 ওষুধের প্রতি রেস্পন্স ফিরিয়ে আনে অর্থাৎ আপনার সমস্যাগুলোর জন্য নির্ধারিত ওষুধ

 🔹 পুনরায় কাজ করা শুরু করবে 

🔹 সার্জারির প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে 

🔹 হারিয়ে যাওয়া শক্তি ফিরিয়ে আনে

🔹 পুরুষাঙ্গের পুরুত্ব বাড়ায় 

🔹 বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত পদ্ধতি

🔹 নিরাপদ ও কার্যকরী

বাংলাদেশে আমরা, এই চিকিৎসা পদ্বতির ব্যবহার সাফল্যের সাথে শুরু করেছি এবং উৎসাহব্যাঞ্জক সাড়াও ইতিমধ্য পেয়েছি।

উন্নত বিশ্বে এই চিকিৎসা গুলো অনেক আগে থেকেই প্রচলিত কিন্তু আমাদের দেশে রিসেন্টলী শুরু হয়েছে।  যেহেতু এই চিকিৎসার বিশেষ ধরনের চিকিৎসক টিম এবং উন্নত মেশিনের প্রয়োজন হয়, তাই তুলুনামূকভাবে এর খরচ কিছুটা বেশি কিন্তু আমরা যদি একই রোগের মোট খরচকৃত টাকার সাথে হিসাব করি তাহলে খুব বেশি নয়।

বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন দক্ষ চিকিৎসক বা রিজেনারেটিভ থেরাপি প্রাক্টিশনার/থেরাপিস্ট এই চিকিৎসা প্রদান করেন।

লেখকঃ শামসুল হক নাদিম, কনসালটেন্ট রিজেনারেটিভ থেরাপি প্র্যাকটিশনার, এডভান্সড সেন্টার ফর রিজেনারেটিভ থেরাপি.

Talk With Us!