ইরেকটাইল ডিসফাংশনের কারণগুলো শারীরিক এবং মানসিক উভয় হতে পারে। শারীরিক কারণের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্থূলতা, এবং হরমোনের সমস্যা অন্তর্ভুক্ত। মানসিক কারণের মধ্যে উদ্বেগ, মানসিক চাপ, এবং বিষণ্নতা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, ধূমপান, মদ্যপান, ওষুধের অপব্যবহার এবং অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সম্ভাবনা বাড়ায়।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন থেকে মুক্তির জন্য সঠিক জীবনধারা গ্রহণ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক ব্যায়াম, মানসিক চাপ কমানো, এবং চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রয়োজন হলে শক ওয়েভ থেরাপি বা পি শটের মতো চিকিৎসাও নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া, ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করলে ইরেকটাইল ডিসফাংশন উন্নত হতে পারে।
শক ওয়েভ থেরাপি (Low-Intensity Extracorporeal Shockwave Therapy) ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি নন-ইনভেসিভ পদ্ধতি। এই থেরাপির মাধ্যমে লিঙ্গে নিম্ন মাত্রার শক ওয়েভ প্রয়োগ করা হয়, যা রক্তনালীর টিস্যুতে রিজেনারেশন ঘটায় এবং নতুন রক্তনালী তৈরি করতে সহায়তা করে। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং ইরেকশন শক্তিশালী হয়। এটি সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী ইরেকটাইল ডিসফাংশনের রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ইরেকটাইল ডিসফাংশনের স্থায়ী নিরাময় নির্ভর করে এর কারণের উপর। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ, শক ওয়েভ থেরাপি, এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি অথবা হরমোন থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং মানসিক চাপজনিত কারণে সমস্যাটি হলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং মানসিক থেরাপি দিয়ে তা দীর্ঘমেয়াদীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সাম্প্রতিক চিকিৎসার মধ্যে শক ওয়েভ থেরাপি এবং পি শট সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও, নতুন ধরনের ওষুধ ও হরমোন থেরাপি নিয়েও গবেষণা চলছে। রিজেনারেটিভ মেডিসিন এবং বায়োইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতির মাধ্যমে রক্তনালী ও টিস্যু পুনরুদ্ধারে বড় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ইমপ্লান্ট এবং অন্যান্য সার্জিকাল অপশনও ইরেকটাইল ডিসফাংশনের ক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) বা পুরুষদের লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করেছে। বাংলাদেশে প্রায় সব বড় হাসপাতালেই ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসা পাওয়া যায়। চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে ওষুধ (যেমন সিলডেনাফিল বা ভায়াগ্রা), থেরাপি, হরমোন চিকিৎসা, এবং সার্জারি। এছাড়া, বিশেষজ্ঞ ইউরোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা ও শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যার কারণ নির্ধারণ করে উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
ইরেকটাইল ডিসফাংশনের ঘরোয়া চিকিৎসার মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং মানসিক চাপ কমানোর উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত। তিল, বাদাম, এবং ডার্ক চকোলেটের মতো খাবার রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া, নিয়মিত মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে এবং ইরেকশন শক্তিশালী করতে সহায়ক হতে পারে। তবে, সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে উন্নতি করতে পারে। এটি সাময়িক সমস্যাও হতে পারে এবং নির্দিষ্ট কারণ যেমন মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদির চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি ভালো হয়ে যায়, তবে রোগীর ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে ফলাফল ভিন্ন হতে পারে।
পি শট (Priapus Shot) হলো একটি রিজেনারেটিভ থেরাপি যা প্লেটলেট রিচ প্লাজমা (PRP) ব্যবহার করে। এটি মূলত লিঙ্গের টিস্যু রিজেনারেশনের মাধ্যমে ইরেকটাইল ডিসফাংশনের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। রক্ত থেকে PRP সংগ্রহ করে লিঙ্গে ইনজেক্ট করা হয়, যা নতুন কোষ তৈরিতে সহায়ক হয় এবং রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। পি শটের ফলে লিঙ্গের শক্তি এবং উত্থান ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, এবং এটি নন-ইনভেসিভ চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।
পি শট লিঙ্গের রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং লিঙ্গের টিস্যুর পুনরুজ্জীবন ঘটায়। এটি লিঙ্গের উত্থান ক্ষমতা বৃদ্ধি, যৌন সম্পাদন ক্ষমতা উন্নত, এবং যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে সহায়ক। এটি নন-ইনভেসিভ এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই কার্যকর হয়, যা একে জনপ্রিয় করে তুলেছে। পি শট প্রায়শই দীর্ঘস্থায়ী ইরেকটাইল ডিসফাংশন রোগীদের জন্য কার্যকর প্রমাণিত হয়।
পি শট (Priapus Shot) মূলত ইরেকটাইল ডিসফাংশনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি। রক্ত থেকে প্লাজমা নিয়ে সেটি লিঙ্গে ইনজেক্ট করা হয়। পি শট নেওয়ার আগে লিঙ্গের উত্থান ক্ষমতা কম থাকলে চিকিৎসার পরে সেটি উন্নত হতে পারে। পি শটের পরে লিঙ্গের রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং সেক্সুয়াল পারফরম্যান্সও উন্নত হয়। তবে ফলাফল নির্ভর করে ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা এবং অন্যান্য ফ্যাক্টরের উপর।