Location

2066, EverCare Hospital Link Road ( Near Royel School & Waterpolo Swiming Pool), Bashundhara, Dhaka-1229, Bangladesh

Service Hours

Sat - Thu
11:00 AM - 08:00 PM

Language:

হাত-পা, হাটু-কাঁধ,কনুই ও নিতম্বে ব্যথার কারন ও চিকিৎসা

In This Article

elbow back knee hill pain

হাত, পা, কনুই এবং নিতম্বে ব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা দীর্ঘ সময় ধরে একইভাবে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা এসব স্থানে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা ব্যথার কারণ হয়। দ্বিতীয়ত, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গাট বা অন্য কোনো জয়েন্টের সমস্যা থেকে এই ধরনের ব্যথা তৈরি হতে পারে।

পায়ের এবং হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে ব্যথার কারন

সাধারণত অতিরিক্ত হাঁটা, দৌড়ানো বা ভারী কাজ করার ফলে পায়ের এবং হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে চাপ সৃষ্টি হয়, যা ব্যথার কারণ হতে পারে। 

এছাড়া, পর্যাপ্ত স্ট্রেচিং বা ওয়ার্মআপ ছাড়া হঠাৎ করে কঠোর শারীরিক পরিশ্রম শুরু করলে মাংসপেশি আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। 

ডিহাইড্রেশন বা শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতিও মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প বা ব্যথার কারণ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা বা নার্ভ সংক্রান্ত জটিলতাও পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।

পায়ের এবং হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে ব্যথার চিকিৎসা

পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে এর কারণের ওপর। সাধারণত হালকা ব্যথার ক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে। 

যেমন, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে বরফ প্রয়োগ করা। এটি মাংসপেশির জালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। 

পায়ের ব্যথা কমাতে মাঝে মাঝে পা উঁচু করে রাখা এবং হালকা স্ট্রেচিং করাও উপকারী হতে পারে। যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা গুরুতর হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

পায়ের এবং হাঁটুর নিচের মাংসপেশির ব্যথা নিরাময়ে পিআরপি (প্লেটলেট রিচ প্লাজমা) এবং ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি অত্যন্ত কার্যকর।

পিআরপি থেরাপিতে শরীরের নিজস্ব প্লেটলেট ব্যবহার করা হয়, যা ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু পুনর্গঠনে সহায়ক। শকওয়েভ থেরাপি ব্যথা কমিয়ে দ্রুত আরোগ্য আনতে সহায়তা করে।

গোড়ালি ব্যথার কারণ

সাধারণত, অতিরিক্ত পরিশ্রম, যেমন বেশি হাঁটা বা দৌড়ানো, গোড়ালির মাংসপেশি ও টেন্ডনে চাপ সৃষ্টি করে ব্যথার কারণ হয়। 

এছাড়া, গোড়ালির আঘাত, যেমন ফ্র্যাকচার বা স্প্রেইন,ও ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস, যা গোড়ালির তলায় ইনফ্লেমেশন সৃষ্টি করে, খুবই সাধারণ একটি সমস্যা।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে জয়েন্টের সমস্যা, যেমন আর্থ্রাইটিস, গোড়ালি ব্যথার আরেকটি কারণ। 

ছোট অথবা বড় স্যান্ডেল ব্যবহার বা খুব বেশি উচ্চ হিল পরা থেকেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গোড়ালি ব্যথার  চিকিৎসা

গোড়ালিতে বরফ প্রয়োগ করে বিশ্রাম নিলে প্রাথমিক ভাবে উপকার পাবেন। 

এটি জ্বালাপোড়া ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ব্যথানাশক ওষুধ বা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফিজিওথেরাপি এবং বিশেষ কিছু স্ট্রেচিং ব্যায়াম গোড়ালির মাংসপেশি ও টেন্ডনকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 

যদি ব্যথা গুরুতর হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কিছু ক্ষেত্রে ইনজেকশন বা অস্ত্রোপচারও প্রয়োজন হতে পারে। 

সঠিক মাপের স্যান্ডেল ব্যবহার করা এবং হাঁটার সময়ে সতর্কতা অবলম্বন করাও গুরুত্বপূর্ণ।

কনুই ব্যথার কারণ

দীর্ঘ সময় মোটরবাইক চালানো হলে, কম্পিউটারের মাউস ধরে একটানা কাজ করলে,ভারী ওজন তুললে

অতিরিক্ত শারীরিক কাজ বা একই ধরনের কার্যক্রম দীর্ঘ সময় ধরে করলে কনুইতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হতে পারে। 

বিশেষ করে দীর্ঘ সময় মোটরবাইক চালানো হলে, কম্পিউটারের মাউস ধরে একটানা কাজ করলে,ভারী ওজন তুললে,টেনিস, গলফ খেলা করলে বা ভার উত্তোলন করলে কনুই ব্যথা হতে পারে।

এছাড়াও, আঘাতজনিত কারণে কনুইয়ের জয়েন্ট, লিগামেন্ট বা টেন্ডনে ক্ষতি হলে ব্যথা হতে পারে।

কনুই ব্যথার  চিকিৎসা

হালকা ব্যথার ক্ষেত্রে প্রথমেই কনুইকে বিশ্রাম দেওয়া জরুরি, যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। ব্যথা কমানোর জন্য আক্রান্ত স্থানে বরফ প্রয়োগ করা যেতে পারে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। 

এছাড়া, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ বা পেইনকিলার ব্যথা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর ব্যথার ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

ফিজিওথেরাপি বা বিশেষ ধরনের ব্যায়াম কনুইয়ের মাংসপেশি ও জয়েন্টগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা খুব বেশি হলে কর্টিকোস্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।

কাধ ব্যথার কারণ

প্রথমত, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, যেমন ভারী বস্তু তোলা বা একটানা কাজ করার ফলে কাঁধের মাংসপেশিতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা সৃষ্টি হয়। 

দ্বিতীয়ত, কাঁধের জয়েন্টের সমস্যা, যেমন আর্থ্রাইটিস বা রোটেটর কফ ইনজুরি, এই ব্যথার কারণ হতে পারে।

আঘাতজনিত কারণে কাঁধের টেন্ডন বা লিগামেন্টের সমস্যা, যেমন স্প্রেইন বা টিয়ার,ও ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। 

কিছু ক্ষেত্রে, স্নায়ুর চাপ, যেমন সায়াটিক নার্ভের সমস্যা, কাঁধে ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক অবস্থানে বসা বা দাঁড়ানোর অভাবও কাঁধের ব্যথা বাড়াতে পারে।

কাধ ব্যথার চিকিৎসা

কাঁধের ব্যথার চিকিৎসা এর কারণের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত হালকা ব্যথার ক্ষেত্রে বিশ্রাম নেওয়া এবং বরফ প্রয়োগ করা উপকারী। এটি প্রদাহ ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। 

ব্যথা নিয়ন্ত্রণে পেইনকিলার বা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফিজিওথেরাপি ও স্ট্রেচিং ব্যায়াম কাঁধের মাংসপেশি ও জয়েন্টকে শক্তিশালী করতে সহায়ক। 

যদি ব্যথা গুরুতর হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

কিছু ক্ষেত্রে, ইনজেকশন বা অস্ত্রোপচারও প্রয়োজন হতে পারে। সঠিক ব্যায়াম ও সতর্কতা অবলম্বন করে কাঁধের স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব।

নিতম্ব ব্যথার কারণ

দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা বা ভুলভাবে বসা থেকে নিতম্বের মাংসপেশি ও স্নায়ুতে চাপ পড়ে ব্যথা সৃষ্টি হয়। 

এছাড়াও, সায়াটিক নার্ভের সংস্পর্শে এসে ব্যথা হতে পারে, যেটি পিঠ থেকে নিতম্ব হয়ে পায়ের দিকে প্রসারিত হয়। 

আঘাতজনিত কারণে পিরিফর্মিস মাংসপেশির প্রদাহ, আর্থ্রাইটিস, বা হিপ জয়েন্টের কোনো সমস্যা থেকেও নিতম্বে ব্যথা হতে পারে। 

কিছু ক্ষেত্রে মাংসপেশি টান বা টেন্ডন ইনজুরির ফলেও এই ব্যথা দেখা দিতে পারে।

নিতম্ব/পাছা ব্যথার চিকিৎসা

সাধারণত হালকা ব্যথার ক্ষেত্রে বিশ্রাম নেওয়া এবং ব্যথার স্থানে বরফ লাগানো কার্যকর হতে পারে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। 

এছাড়া, ব্যথানাশক ওষুধ বা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ ব্যথা কমাতে সহায়ক।

নিতম্বের মাংসপেশি প্রসারিত ও শক্তিশালী করার জন্য কিছু হালকা স্ট্রেচিং বা ফিজিওথেরাপি ব্যায়াম করা যেতে পারে। 

যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা গুরুতর হয়, তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি

ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি (Focused Shockwave Therapy) একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি যা মূলত ব্যথা ব্যবস্থাপনা এবং টিস্যু পুনরুজ্জীবনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি বিশেষত দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, পেশি বা টেন্ডনের সমস্যা, এবং ইরেকটাইল ডিসফাংশনের (ED) মতো সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ফোকাসড শকওয়েভ থেরাপি কিভাবে কাজ করে:

  1. শকওয়েভ তৈরি: এই থেরাপিতে বিশেষ একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, যা উচ্চ-শক্তির শব্দ তরঙ্গ তৈরি করে। এই শব্দ তরঙ্গগুলো শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে ফোকাস করে দেওয়া হয়।
  2. তরঙ্গ প্রেরণ: শকওয়েভগুলি ব্যথার স্থানে বা সমস্যা এলাকায় প্রবেশ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর উপর কাজ করে। এগুলো শরীরের গভীরে গিয়ে টিস্যুতে মাইক্রোস্কোপিক আঘাত তৈরি করে।
  3. শরীরের প্রতিক্রিয়া: মাইক্রোস্কোপিক আঘাতের ফলে শরীর প্রাকৃতিকভাবে সেই টিস্যু বা অঞ্চলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোর পুনর্গঠন শুরু করে। এটি নতুন কোষের বৃদ্ধি এবং টিস্যুর পুনরুজ্জীবনে সহায়ক হয়।
  4. ব্যথা হ্রাস: শকওয়েভের প্রভাবে প্রদাহ হ্রাস পায়, ব্যথা কমে আসে, এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর নিরাময় প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা বা পেশির আঘাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

Talk With Us!